টাইপোগ্রাফি(Typography) কী ?
একটি ওয়েবসাইটের ফন্ট,
ফন্ট-সাইজ, ওয়েট,এলাইনমেন্ট,কালার, লাইন-হাইট, প্যারাগ্রাফ, হেডিং, লে-আউট, ইত্যাদি মানসম্মতভাবে বা ভিজিটরের
কাছে সহজে বোধগম্য করাই হল টাইপোগ্রাফী।
টাইপোগ্রাফী ডিজাইনের
একটি অন্যতম অংশ। এর সঠিক ব্যবহার করে ডিজাইনে পরিপূর্ণতা আনা সম্ভব। ডিজাইনের আউটলুক, মুড, ব্যতিক্রমী মাত্রা কিংবা ক্রিয়েটিভিটি বাড়াতে টাইপোগ্রাফীর বিকল্প নেই। অর্থাৎ টাইপোগ্রাফী হল একটি আর্ট বা অক্ষর কে সাজানোর বিভিন্ন কলাকৌশল। যা একটি ওয়েব সাইটের আউটলুক কিংবা ক্রিয়েটিভিটি বাড়াতে সাহায্য করে।
যেমন- মনে
করুন, আপনি আপনার নাম টি লিখলেন। কিন্তু এটাকে স্বাভাবিকভাবে না লিখে প্রথম
বর্ণটাকে একভাবে লিখলেন। তার একটা রং
দিলেন। পরের বর্ণটাকে অন্য স্টাইলে অন্য কোন রংয়ে লিখলেন। এভাবে বিভিন্ন স্টাইল ও
ফন্ট এবং রংয়ের সমন্বয়ে আপনার লেখাটাকে আকর্ষনীয় করে তুললেন। এটাই হলো টাইপোগ্রাফী।
টাইপোগ্রাফীর গুরুত্বঃ
একজন ওয়েব ডিজাইনারের চেয়ে একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনারের টাইপোগ্রাফি সম্পর্কে জানার প্রয়োজনীয়তা বেশি। কারন একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার একটি ওয়েব-সাইট এর মূল ডিজাইন (PSD) করে থাকে। আর ওয়েব ডিজাইনার ঐ ডিজাইনটি ভিজিটরকে দেখানোর জন্য বিভিন্ন ল্যাঙ্গুয়েজ বা কোড ব্যবহার করে একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়েবসাইট তৈরি করে।
এক্ষেত্রে গ্রাফিক্স ডিজাইনার যদি তার ‘PSD’ তে টাইপোগ্রাফী ঠিক না রাখে, তাহলে ওয়েব ডিজাইনারের ওয়েব সাইটের টাইপোগ্রাফীও ঠিক থাকবে না।
একটি ওয়েবসাইটের লে-আউট তৈরি করতে অবশ্যই টাইপোগ্রাফী সম্পর্কে জানা প্রয়োজন।
সুতরাং টাইপোগ্রাফীর গুরুত্ব অপরিসীম।
টাইপোগ্রাফী ঠিক রাখতে যে
বিষয় গুলো আবশ্যক। সেগুলো নিম্মে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলঃ
১. সঠিক ফন্ট ব্যবহার
করাঃ
বিভিন্ন
প্রকার ফন্ট রয়েছে। এরমধ্যে কিছু ফন্টের ওয়েট বেশি বা স্টাইল এক রকম, আবার কিছু ফন্টের ফন্ট-ওয়েট কম এবং স্টাইল ও ভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। তাই, আমাদেরকে ডিজাইনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ফন্ট নির্বাচন করতে হবে।তবে যে ফন্টটি সর্বজনের কাছেই গ্রহণযোগ্য এবং সকল ব্রাউজারেই সাপোর্টটেড সেই ফন্ট ব্যবহার করাই উত্তম।যেমন- Times New Roman, arial, verdana ইত্যাদি।
২. একাধিক ফন্ট ব্যবহারে সতর্কতাঃ
ফন্টে ভিন্নতা রাখতে হবে, তাই বলে অপ্রয়োজনে একাধিক ফন্ট ব্যবহার করা ঠিক নয়। কারন একাধিক ফন্ট ব্যবহারের কারনে ডিজাইনের বা ওয়েব সাইটের আউটলুক নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
৩. লেটারস্পেসিং:
একেক ফন্ট একেক রকম হয়ে থাকে। তাই ফন্ট ব্যবহারের সময় লেটার
স্পেসিং ঠিক রাখতে হবে। যেমন- ফন্ট সাইজ, ওয়েট, এ্যালাইনমেন্ট, স্টাইল এগুলো
ডিজাইন বা ওয়েব সাইটের সাথে মানানসই এবং ইউজার ফ্রেন্ডলী করে দিতে হবে।
৪. হেডিং ও প্যারাগ্রাফঃ
আর্টিকেল এর ক্ষেত্রে হেডিং ও প্যারাগ্রাফ খুবই
গুরুত্বপূর্ণ। এর টাইপোগ্রাফী ঠিক রাখতে হেডিং, প্যারাগ্রাফ, চারপাশের মার্জিন,
লাইন স্পেস এগুলো সঠিকভাবে দিতে হবে।হেডিং এবং প্যারাগ্রাফে- ফন্টের কালার তার
ব্যাকগ্রাউন্ডের কালারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নির্ধারণ করতে হবে।
৫. মেজার
(Measure) :
কন্টেন্ট এর দৈর্ঘ্য পরিমাপ করা হলো মেজার। কনটেন্ট যদি অনেক দীর্ঘ হয়, তাহলে তা পাঠকের বুঝতে কিছুটা কষ্ট হয়, যার ফলে পাঠক একসময় পড়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।এজন্য আমাদের লেখাকে বেশি দীর্ঘও করা যাবেনা আবার বেশি ছোট ও করা যাবেনা।
উপসংহারঃ
টাইপোগ্রাফি বিষয়টি নির্ভর করে সম্পূর্ণ ডিজাইনারের ক্রিয়েটিভিটির উপর।আপনার ক্রিয়েটিভিটি যত ভালো টাইপোগ্রাফীও ততো ভালো হবে। এজন্য টাইপোগ্রাফী ঠিক রাখতে ধৈর্য্য সহকারে ডিজাইন করতে হবে। নিজের ক্রিয়েটিভিটি দিয়ে নিখুঁতভাবে ডিজাইনকে ফুটিয়ে তুলতে হবে।